গাজায় রক্তের তীব্র সংকট, আহতদের বাঁচানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় পরিস্থিতি ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে। বিশেষ করে শুজাইয়া এলাকায় সোমবার সকাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বিস্ফোরণ ও গোলাবর্ষণে আকাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে চারপাশ, আর প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য সাধারণ মানুষ।
প্রথমে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩ জন, তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় অন্তত ২০ জনে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে নারী ও শিশুরাও। যেসব ভবন এখনও পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি, সেখানে আশ্রয় নিচ্ছেন অসহায় পরিবারগুলো। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন, যাদের জীবিত বা মৃত অবস্থায় বের করা সম্ভব হয়নি।
আহতদের বাঁচাতে নেই প্রয়োজনীয় রক্ত
সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি হয়েছে চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে। গাজার আল-আহলি আরব হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আহতদের স্রোত ক্রমেই বাড়ছে, কিন্তু হাসপাতালে রক্তের মজুত প্রায় শেষ হয়ে গেছে। ফলে আহতদের জীবন রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, বর্তমানে গাজার স্বাস্থ্যখাতে যে পরিমাণ রক্ত দরকার, তা কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে বাইরে থেকেও রক্ত বা চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ফলে অনেক আহত ব্যক্তি চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছেন।
ধ্বংসস্তূপে নিখোঁজ, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন মানুষজন
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রকৃতি এমন যে, কোনো এলাকা কিছুক্ষণ আগেও যেটি নিরাপদ মনে হচ্ছিল, সেটিই মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। ফলে বহু মানুষ এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় পালাতে বাধ্য হচ্ছেন। যেসব ভবন এখনও ভাঙেনি, সেখানেও বোমার আঘাত লাগার আশঙ্কায় কেউ নিরাপদ বোধ করছেন না।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সহায়তার আহ্বান
এই মুহূর্তে গাজার মানুষ চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন। চিকিৎসা, খাবার, পানি—সবকিছুরই ঘাটতি। সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে রক্ত। চিকিৎসা সুবিধা ও সরঞ্জামের সরবরাহ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মানবিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো।