ক্যাথে প্যাসিফিকের একটি বিমান হংকং থেকে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি রাত ১২টা ৩৮ মিনিটে যাত্রা শুরু করে। নির্ধারিত সময়ে, যখন এটি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে পৌঁছায়, তখনও সেখানকার ঘড়ি ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টা ৫৫ মিনিট দেখাচ্ছে। অর্থাৎ, ২০২৫ সালে রওনা দেওয়া এই বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছায় এখনও ২০২৪ সালের।
ফ্লাইটরাডার-২৪.কমের তথ্য অনুযায়ী, সময়ের এই তারতম্যের কারণে নববর্ষ শুরু হওয়া দেশ থেকে যেকোনো ফ্লাইট রওনা দিলে তা যুক্তরাষ্ট্রসহ সমগোত্রীয় দেশে পৌঁছাতে ২০২৪ সালে। উদাহরণস্বরূপ, হংকং থেকে নববর্ষের প্রথম প্রহরে রওনা দেওয়া একটি বিমান, যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে পৌঁছে পুরোনো বছর ২০২৪ সালেই।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশে নববর্ষের যাত্রা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। তবে, এখনও অনেক পশ্চিমা অঞ্চলে ৩১ ডিসেম্বর রাতের মধ্যে রয়েছে। সিএনএনের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের ৩৯টি ভিন্ন সময় অঞ্চলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে মোট ২৬ ঘণ্টা সময় লাগে। তাই, বিশ্বব্যাপী পুরোদমে ২০২৫ সাল গণনায় কিছু সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এই সময়ের মধ্যে, কোনো অঞ্চল নববর্ষের আনন্দে মাতলেও পৃথিবীর অন্য প্রান্তে পুরোনো বছরের শেষের ক্ষণ গণনা চলছে। এই পরিস্থিতিতে, গ্রিনিচ মান সময়ে এগিয়ে থাকা হংকংসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নববর্ষ এলেও, যুক্তরাষ্ট্রসহ সম অঞ্চলের রাত তখনও ২০২৪ সালের শেষের দিকে রয়েছে।
বিশ্বের সবার আগে নতুন বছর ২০২৫ সালকে স্বাগত জানিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ কিরিবাতি। নববর্ষ উদযাপনকারী প্রথম এই দেশটির বৃহত্তম ক্রিসমাস দ্বীপ, সবার আগে নতুন বছরে পদার্পণ করেছে। এরপর, ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশ নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় দেশ হিসেবে নতুন বছরকে আতশবাজির ঝলকানিতে বরণ করেছে। তৃতীয় পর্যায়ে, হাওয়াই, আমেরিকান সামোয়া সহ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক দ্বীপে নববর্ষ উদ্যাপিত হবে।
এই সময় অঞ্চলের বৈচিত্র্য এবং আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা (International Date Line) এর কারণে, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নতুন বছরের উদযাপন বিভিন্ন সময়ে ঘটে। আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা পশ্চিম থেকে পূর্বে অতিক্রম করলে তারিখের পরিবর্তন ঘটে, যা সময়ের এই তারতম্যের মূল কারণ। ফলে, একদিকে নতুন বছর উদযাপনের রম্যতা, অন্যদিকে এখনও পূর্বে বছরের শেষের ক্ষণ গণনা করার বাস্তবতা মিলে যায়, যা পৃথিবীকে একটি সময়কালে বিভক্ত রাখে।
নতুন বছরের উদযাপন বিশ্বব্যাপী নানা রঙিন ও ঐতিহ্যবাহী উপায়ে হয়। প্রতিটি দেশের নিজস্ব সাংস্কৃতিক রীতি এবং উৎসবের মাধ্যমে তারা ২০২৫ সালকে স্বাগত জানায়। এই বৈচিত্র্যময় উদযাপনগুলি পৃথিবীকে আরো সংহত এবং একত্রিত করার একটি সুন্দর উদাহরণ হিসেবে দাঁড়ায়।