মার্চ ফর গাজা’র ঘোষণাপত্র: ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের চুক্তি বাতিলের আহ্বান
গাজায় ইসরায়েলের নির্মম আগ্রাসন ও ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সেই প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মার্চ ফর গাজা’ শীর্ষক এক বিশাল গণসমাবেশ। এই কর্মসূচির মূল মঞ্চ থেকে পাঠ করা ঘোষণাপত্রে ইসরায়েলের সঙ্গে সকল ধরনের কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক চুক্তি বাতিল এবং সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মুখর ছিল গাজা প্রীতির স্লোগানে
শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলবেলা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাজারো মানুষের ঢল নামে। সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত, রাজধানীর অলিগলি, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রমিক এলাকা, বাজার—সব জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে আসেন বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রতিবাদকারীদের হাতে ছিল গাজার পতাকা, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার।
সমাবেশের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান “মার্চ ফর গাজা”-র ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। তিনি বলেন,
“আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে মুসলিম বিশ্বসহ বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশের চুক্তি বাতিল ও সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানাচ্ছি। গাজায় চলমান গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।”
ঘোষণাপত্রে কী ছিল?
- গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান
- মুসলিম বিশ্বকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুরোধ
- ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি
- বাংলাদেশের তরফ থেকে জোরালো নীতিগত অবস্থান নেওয়ার দাবি
- গণহত্যার বিরুদ্ধে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়েরের অনুরোধ
রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সম্মিলিত অংশগ্রহণ
এই কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষাবিদ ও সোশ্যাল মিডিয়ার পরিচিত মুখরা অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন,
“গাজায় শিশুদের রক্তে যখন ভূমি লাল হয়ে যাচ্ছে, তখন আমরা নিরব থাকতে পারি না। ইসরায়েল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
বিশ্ব মুসলিমের প্রতি একতাবদ্ধ হবার আহ্বান
বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, আজ যদি মুসলিম বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ হতো, তবে ফিলিস্তিনের শিশুরা আর গাজা উপত্যকার নারীরা এমন নির্মমভাবে নিহত হতো না। সেইসঙ্গে তাঁরা বাংলাদেশের মানুষদের সচেতন হওয়ার, সোচ্চার হওয়ার, বয়কট আন্দোলনে অংশ নেওয়ার এবং গাজার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।